ভূগোল ও পরিবেশ: নবম-দশম | অধ্যায়-০৪ : পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন | এসএসসি ২০২১ সালের বোর্ড প্রশ্নের সমাধান

ভূগোল ও পরিবেশ: নবম-দশম | অধ্যায়-০৪ : পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন

School Tips

ভূগোল ও পরিবেশ: নবম-দশম | অধ্যায়-০৪ : পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন | এসএসসি ২০২১ সালের বোর্ড প্রশ্নের সমাধান নিচে দেওয়া হলো-

 

প্রশ্ন: ১ | রাজশাহী বোর্ড ২০২১

প্রশ্ন: ১ | রাজশাহী বোর্ড ২০২১

ক. লাভা কাকে বলে?

খ. ইরানের ‘কোহিসুলতান’ কোন ধরনের আগ্নেয়গিরি? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘A’ মণ্ডলের বিবরণ দাও ।

ঘ. ‘B’ ও ‘C’ মণ্ডলদ্বয়ের মধ্যে কোন মণ্ডলে ভারি উপাদানের উপস্থিতি বেশি? বিশ্লেষণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ দিয়ে নির্গত পদার্থকে লাভা বলে।

খ) উত্তরঃ ইরানের কোহিসুলতান মৃত আগ্নেয়গিরি ।

যেসব আগ্নেয়গিরি দীর্ঘকাল ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে এবং ভবিষ্যতেও অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা নেই, সেগুলাকে মৃত আগ্নেয়গিরি বলে ইরানের কোহিসুলতান এ ধরনের একটি মৃত আগ্নেয়গিরি।

গ) উত্তরঃ উদ্দীপকের চিত্রের ‘A’ হলো অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক । ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম; গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্র তলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু। সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল স্তর- বলে, যা সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা সাধারণভাবে সিমা নামে পরিচিত। ভূত্বকের উপরি ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন— পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি ।

ঘ) উত্তরঃ ‘B’ ও ‘C’ মণ্ডলদ্বয় যথাক্রমে গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডলের মধ্যে কেন্দ্রমণ্ডলে ভারি উপাদানের উপস্থিতি বেশি।

তৃত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ।

ভূত্বকের উপরের গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। ‘গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এই মণ্ডল বিস্তৃত। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

‘B’ মণ্ডল সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত। অপরদিকে, ‘C’ মণ্ডল লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসার সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ ‘B’ মণ্ডল তথা গুরুমণ্ডলের উপাদান থেকে ‘C’ মণ্ডল তথা কেন্দ্রমণ্ডলে ভারি উপাদানের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

প্রশ্ন: ২ | সিলেট বোর্ড ২০২১

প্রশ্ন: ২ | সিলেট বোর্ড ২০২১
ক. ভূমিকম্প কাকে বলে?

খ. বালুচর কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘P’ পৃথিবীর কোন মণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘Q’ ও ‘R’ মণ্ডলের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ ভূঅভ্যন্তরে দ্রুত বিপুল শক্তি বিমুক্ত হওয়ায় পৃথিবীপৃষ্ঠে যে ঝাঁকুনি সৃষ্টি হয় তাকে ভূমিকম্প বলে ।

খ) উত্তরঃ নদীতে বালি, নুড়ি, কাঁকর কদম ইত্যাদি সঞ্চিত হয়ে যে নতুন ভূমির সৃষ্টি হয় তাকে বালুচর বলে ।

বালুচর প্রধানত দুটি কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রথমত, নদীর পানিতে যখন অতিরিক্ত বালু, কদম, নুড়ি ইত্যাদি মিশ্রিত থাকে তখন স্রোতের বেগ হ্রাস পায় এবং বাহিত পদার্থসমূহ দ্রুত সঞ্চিত হয়ে চালুচরের সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত, আঁকা-বাঁকা নদীর মধ্যে কদম, বালি, নুড়ি ইত্যাদি সঞ্জিত হয়েও বালুচরের সৃষ্টি হয় ।

গ) উত্তরঃ ‘P’ পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত।

গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত মণ্ডলকে কেন্দ্রমণ্ডল বলে। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের তরল বহিরাবরণ প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং কঠিন অন্তঃভাগ প্রায় ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

উদ্দীপকের ছকে ‘P’-তে নিকেল ও পারদের কথা বলা হয়েছে যা কেন্দ্রমণ্ডলে রয়েছে। তাই বলা যায়, ‘P’ পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত।

ঘ) উত্তরঃ ‘Q’ এবং ‘R’ হলো যথাক্রমে অশ্মমণ্ডল ও গুরুমণ্ডল।

ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম; গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্র তলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু। সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল স্তর বলে, যা সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা সাধারণভাবে সিমা নামে পরিচিত। ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন— পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি।

অপরদিকে তৃত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসন্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল যা ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ মণ্ডল সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত। নিম্ন গুরুমণ্ডল প্রধানত আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম এবং সিলিকন ডাইঅক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত। উদ্দীপকের চিত্রে ‘Q’ সিলিকা ও অ্যালুমিনিয়াম এবং ‘R’ লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড দ্বারা গঠিত। সুতরাং এ দুয়ের মধ্যে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন উপাদানগত বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।

প্রশ্ন: ৩ | ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২১

প্রশ্ন: ৩ | ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২১

ক. শিলা কাকে বলে?

খ. অগ্ন্যুৎপাত কীভাবে মাটির তলদেশের সম্পদ আহরণে সহযোগিতা করে? ব্যাখ্যা কর।

গ. জীবজগতের জন্য ‘A’ স্তরটি গুরুত্বপূর্ণ— ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে ‘B’ ও ‘C’ স্তর দুটির মধ্যে কোন স্তরটি অপেক্ষাকৃত ভারি ধাতু পূর্ণ? বিশ্লেষণ কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ এক বা একাধিক খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত পদার্থকে শিলা বলে।

খ) উত্তরঃ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে লাভা নির্গত হয়ে সম্পদ আহরণে সহযোগিতা করে।

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে যে লাভা নির্গত হয় তার সঙ্গে মাটির তলদেশের অনেক খনিজ পদার্থ নির্গত। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাংশে অগ্ন্যুৎপাতের জন্য অধিক পরিমাণে খনিজ সম্পদ আহরণ করে থাকে।

গ) উত্তরঃ উদ্দীপকের চিত্রের ‘A’ হলো অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক ।

ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম; গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্র তলদেশে গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু।

সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল স্তর বলে, যা সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা সাধারণভাবে সিমা নামে পরিচিত। ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন— পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি।

মানুষ ও প্রাণীসহ বিভিন্ন প্রকার জীবের বসবাস এ মণ্ডলে। এখানে সমভূমি, পর্বত ও মালভূমি আছে। সমুদ্র তলদেশেও অনেক জীবের বসবাস আছে যা অশ্মমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত। এককথায় জীবের বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় সকল উপাদান (অক্সিজেন, পানি) এ মণ্ডলে বিদ্যমান। তাই জীবজগতের জন্য এ মণ্ডলটি গুরুত্বপূর্ণ।

ঘ) উত্তরঃ ‘B’ ও ‘C’ ও মণ্ডলদ্বয় যথাক্রমে গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডলের মধ্যে কেন্দ্রমণ্ডলে ভারি উপাদানের উপস্থিতি বেশি। তৃত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ ।

গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এই মণ্ডল বিস্তৃত। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

‘B’ স্তর সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত। অপরদিকে, ‘C’ স্তর লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসার সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ ‘B’ স্তর তথা গুরুমণ্ডলের উপাদান থেকে ‘C’ স্তর তথা কেন্দ্রমণ্ডলে ভারি উপাদানের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।

প্রশ্ন: ৪ | রাজশাহী বোর্ড ২০২০

প্রশ্ন: ৪ | রাজশাহী বোর্ড ২০২০
ক. খনিজ কাকে বলে?

খ. পম্পেই নগর কেন ধ্বংস হয়? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘Z’ চিহ্নিত স্তরটির বর্ণনা দাও।

ঘ. ‘X’ ও ‘Y’ স্তর দুটির মধ্যে কোনটি মানুষের বসবাসের উপযোগী স্তর? যুক্তিসহ মতামত দাও ।

৪নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ কতকগুলো মৌলিক উপাদান প্রাকৃতিক উপায়ে মিলিত হয়ে যে যৌগ গঠন করে তাকে খনিজ বলে ।

খ) উত্তরঃ আগ্নেয়গিরির লাভা নির্গত হয়ে পম্পেই নগর ধ্বংস হয় ।

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লাভা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম, নগর, কৃষিক্ষেত্র সব ধ্বংস করে। ১৮৭৯ সালে ইতালির ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে পম্পেই নগর উত্তপ্ত লাভা ও ভস্মরাশির মধ্যে ডুবে গিয়ে ধ্বংস হয় ।

গ) উত্তরঃ ‘Z’ চিহ্নিত স্তরটি হলো কেন্দ্রমণ্ডল ।

গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত মণ্ডলকে কেন্দ্রমণ্ডল বলে। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের তরল বহিরাবরণ প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং কঠিন অন্তঃভাগ প্রায় ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকের চিত্রে ‘X’ দ্বারা অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক এবং ‘Y’ দ্বারা গুরুমণ্ডলকে বোঝানো হয়েছে। এ দুই স্তরের মধ্যে অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক মানুষের বসবাসের উপযোগী।

অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক পৃথিবীর বাইরের স্তর। পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে মানুষসহ সকল প্রাণী বসবাস করছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বাইরের স্তর। এ স্তরে সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি উপাদান বিদ্যমান। এ স্তরের উপরিভাগে কোমল মাটি বিদ্যমান। যেখানে উদ্ভিদরাজি জন্মায়; মানুষ ভূপৃষ্ঠে কৃষিকাজ পরিচালনা করে তাঁদের যাবতীয় খাদ্যের সংস্থান করে থাকে। গোটা মানবজাতির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ। কেননা এ স্তরই সৌরশক্তি; বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডলের ‘আধার। আর পৃথিবীপৃষ্ঠের পরিবেশ সহনীয়। তাই অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক জীবজগতের বিকাশে সহায়ক হয়েছে।

অপরদিকে, ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত।

এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল স্তরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। প্রচণ্ড তাপের জন্য এখানে যে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয় তার ফলে এর ওপর ভাসমান মহাদেশগুলো চলমান অবস্থায় থাকে। এতে ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন ভূমিরূপের সৃষ্টি হয়। যা মানুষের বসবাসের উপযোগী নয়। তাই বলা যায়, ‘X’ ও ‘Y’ স্তর অর্থাৎ অশ্মমণ্ডল ও গুরুমণ্ডলের মধ্যে অশ্মমণ্ডলই মানুষের বসবাস উপযোগী স্তর।

প্রশ্ন: ৫ | ঢাকা বোর্ড ২০১৯

প্রশ্ন: ৫ | ঢাকা বোর্ড ২০১৯
ক. শিলা কাকে বলে?

খ. পর্বতের বরফ গলা পানি প্রবাহিত হয়ে কী সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর।

গ. চিত্রে B স্তরের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. চিত্রে A ও C স্তর শনাক্ত করে এদের তুলনামূলক বিশ্লেষণ কর।

৫নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ এক বা একাধিক খনিজ পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত পদার্থকে শিলা বলে।

খ) উত্তরঃ পর্বতের বরফ গলা পানি প্রবাহিত হয়ে নদীর সৃষ্টি হয় ।

উঁচু পর্বত, মালভূমি বা উঁচু কোনো স্থান থেকে বৃষ্টি, প্রস্রবণ, হিমবাহ বা বরফ গলা পানির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্রোতধারার মিলিত প্রবাহ যখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে নির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত হয়ে সমভূমি বা নিম্নভূমির উপর দিয়ে কোনো বিশাল জলাশয় বা হ্রদ অথবা সমুদ্রের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন নদীর সৃষ্টি হয় ।

গ) উত্তরঃ চিত্রে ‘B’ চিহ্নিত স্তরটি হলো গুরুমণ্ডল ।

গুরুমণ্ডলের গঠনগত কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য নিচে ব্যাখ্যা করা হলো।

ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে । গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। এর উপরিভাগ ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। যা লোহা S ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত। নিম্নভাগ আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড এবং সিলিকন ডাই-অক্সাইডসমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত ।

ঘ) উত্তরঃ চিত্রের ‘A’ স্তরটি হলো অশ্মমণ্ডল এবং ‘C’ স্তরটি হলো কেন্দ্রমণ্ডল। বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে এদের মধ্যে বেশকিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। নিচে

এদের তুলনামূলক আলোচনা করা হলো। ভূপৃষ্ঠের নানা প্রকার শিলা দ্বারা গঠিত কঠিন বহিরাবরণকে অশ্মমণ্ডল বলে। ‘অশ্ম’ শব্দের অর্থ হলো শিলা। যে কারণে এ মণ্ডলকে শিলামণ্ডলও বলা হয়। এ মণ্ডম্বের গভীরতা ৩ কি.মি. হতে ৪০ কি.মি. পর্যন্ত হয়ে থাকে। গড় গভীরতা ২০ কি.মি.। এ স্তরের আপেক্ষিক গুরুত্ব পানির চেয়ে ২/৩ গুণ ভারী। এ শিলামণ্ডল সিলিকন, ম্যাগনেসিয়াম, কোয়ার্টজ, ফেলসপার, গ্রানাইট ও কিছু ব্যাসল্ট উপাদান দ্বারা গঠিত। অশ্মমণ্ডলের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এ স্তরটি দুটি স্তরে বিভক্ত উপরের স্তরটি হালকা। এ স্তরকে সিয়াল স্তর বলে। নিচের স্তরটি ভারী। এ স্তরকে সিমা স্তর বলে।

অন্যদিকে, গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এ মণ্ডল বিস্তৃত। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের একটি তরল বহিরাবরণ আছে, যা প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং একটি কঠিন অন্তঃভাগ আছে, যা ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

সুতরাং উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে বোঝা যায়, ‘A’ ও ‘C’ স্তরের মধ্যে বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে।

প্রশ্ন: ৬ | কুমিল্লা বোর্ড ২০১৯

প্রশ্ন: ৬ | কুমিল্লা বোর্ড ২০১৯

ক. ভূত্বক কাকে বলে?

খ. অস্তরীভূত শিলা কীভাবে গঠিত হয়? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘A’ অংশটি পৃথিবীর কোন স্তরকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘B’ ও ‘C’ স্তরে কোনটিতে পারদের আধিক্য রয়েছে? – উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

৬নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক ।

খ) উত্তরঃ আগ্নেয় শিলার কোনো স্তর থাকে না বলে একে অস্তরীভূত শিলা বলে ।

পৃথিবী এক সময় ছিল জ্বলন্ত বাষ্পপিণ্ড। কালক্রমে শীতল হয়ে উত্তপ্ত তরল অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। তারপর ধীরে ধীরে তাপ বিকিরণের ফলে পৃথিবীর উপরিভাগ কঠিন ও শীতল আকার ধারণ করে। উত্তপ্ত তরল পদার্থসমূহ শীতল হয়ে জমাট বেঁধে পৃথিবীর উপরিভাগে কঠিন অস্তরীভূত শিলার এক আবরণ সৃষ্টি করে। এগুলো আরও শীতল হয়ে জমাট বেঁধে অস্তরীভূত শিলায় পরিণত হয়।

গ) উত্তরঃ ‘A’ স্তরটি ভূঅভ্যন্তরের অশ্মমণ্ডল যা ভূত্বক।

ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম; গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্র তলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু। সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল স্তর বলে, যা সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা সাধারণভাবে সিমা নামে পরিচিত।

ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমনপর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি। ভূত্বকের নিচের দিকে প্রতি কিলোমিটারে ৩০° সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়ে।

ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকে ‘B’ ও ‘C’ স্তর হলো গুরুমণ্ডল ও কেন্দ্রমণ্ডল কেন্দ্রমণ্ডলে পারদের আধিক্য রয়েছে।

তৃত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ । গুরুমণ্ডলের ঠিক পরে রয়েছে কেন্দ্রমণ্ডল। গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত এই মণ্ডল বিস্তৃত। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

‘B’ স্তর সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ দ্বারা গঠিত। অপরদিকে, ‘C’ স্তর লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসার সমন্বয়ে গঠিত। সুতরাং ‘C’ স্তর অর্থাৎ কেন্দ্রমণ্ডল স্তরে পারদের অধিক্য রয়েছে।

প্রশ্ন: ৭| ঢাকা বোর্ড ২০২১

নিচের সারণির আলোকে সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

প্রশ্ন: ৭| ঢাকা বোর্ড ২০২১

ক. ভূত্বক কাকে বলে?

খ. গম্বুজ আকার ধারণ করে কোন পর্বত? ব্যাখ্যা কর।

গ. সারণিতে উল্লিখিত ‘Q’ চিহ্নিত শিলার বর্ণনা দাও।

ঘ. উদ্দীপকে ‘P’ ও ‘R’ চিহ্নিত শিলার মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা কর।

৭নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক।

খ) উত্তরঃ ল্যাকোলিথ পর্বত গম্বুজ আকার ধারণ করে। কখনো কখনো পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে গলিত শিলা বা ম্যাগমা বিভিন্ন গ্যাসের দ্বারা স্থানান্তরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে বের হয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু কোনো কোনো সময় এগুলো ভূপৃষ্ঠে না পৌঁছে ভূত্বকের নিচে একস্থানে জমাটবদ্ধ হয় এবং ঊর্ধ্বমুখী চাপের দ্বারা শিলাস্তর স্ফীত হয়ে ভূত্বকের অংশবিশেষ গম্বুজ আকার ধারণ করে। এভাবে সৃষ্ট পর্বতকে ল্যাকোলিথ বা, গম্বুজ পর্বত বলে। যেমন- আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হেনরী।

গ) উত্তরঃ সারণিতে উল্লিখিত ‘Q’ চিহ্নিত পাললিক শিলার উদাহরণ দেওয়া হয়েছে।

পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয়েছে তাকে পাললিক শিলা বলে। বৃষ্টি, বায়ু, তুষার, তাপ, সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি শক্তির প্রভাবে আগ্নেয় শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বিচূর্ণীভূত হয়ে রূপান্তরিত হয় এবং কাঁকর, কাদা, বালি ও ধুলায় পরিণত হয়। ক্ষয়িত শিলাকণা জলস্রোত, বায়ু এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে পলল বা তলানিরূপে কোনো নিম্নভূমি,

হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ঐসব পদার্থ ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে কঠিন শিলায় পরিণত হয়। স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয় বলে একে স্তরীভূত শিলাও বলা হয়। তাছাড়া এ শিলা সহজেই ক্ষয়ীভূত হয় এবং সাগরের তলদেশে সঞ্চিত হতে দেখা যায়।

পাললিক শিলা যৌগিক, জৈবিক বা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হতে পারে। বেলেপাথর, কয়লা, শেল, চুনাপাথর, কাদাপাথর, কেওলিন প্রভৃতি পাললিক শিলার উদাহরণ। উদ্দীপকের সারণিতেও ‘Q’ শিলার অর্থাৎ পাললিক শিলার কথা বলা হয়েছে।

ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকের ‘P’ ও ‘Q’ চিহ্নিত শিলা হলো যথাক্রমে আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা।

আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত বা ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় ভূত্বকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এভাবে ব্যাসন্ট শিলার সৃষ্টি হয়। আবার, উত্তপ্ত ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে না এসে ভৃগর্ভে জমাট বেঁধে সিল শিলার সৃষ্টি হয় ।

অপরদিকে, আগ্নেয় ও পাললিক শিলা যখন প্রচণ্ড চাপ, উত্তাপ এবং রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপ পরিবর্তন করে নতুন রূপ ধারণ করে তখন তাকে রূপান্তরিত শিলা বলে। ভূআন্দোলন, অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প, রাসায়নিক ক্রিয়া কিংবা ভূগর্ভস্থ তাপ আগ্নেয় ও পাললিক শিলাকে রূপান্তরিত করে। চুনাপাথর রূপান্তরিত হয়ে মার্বেল, কাদা ও শেল রূপান্তরিত হয়ে স্লেট পরিণত হয়।

উদ্দীপকে ‘P’ ও ‘Q’ শিলাদ্বয়ের উদাহরণ থেকে বলা যায় ব্যাসল্ট, সিল শিলা এবং কাদাপাথর, কেওলিন শিলার মধ্যে অর্থাৎ আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলার মধ্যে গঠনগত বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান ।

প্রশ্ন: ৮ | যশোর বোর্ড ২০২১

প্রশ্ন: ৮ | যশোর বোর্ড ২০২১
ক. ভূত্বক কাকে বলে?

খ. খনিজকে শিলা বলা যায় কি? ব্যাখ্যা কর।

গ. ‘X’ কোন ধরনের শিলা? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ‘Y’ ও ‘Z’ এর মধ্যে কোনটি মহাদেশীয় ভূত্বক গঠনে বেশি ভূমিকা রাখে? বিশ্লেষণ করু।

৮নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কুঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক।

খ) উত্তরঃ খনিজকে শিলা বলা যায় না।

খনিজ হলো একটি প্রাকৃতিক অজৈব পদার্থ যার সুনির্দিষ্ট রাসায়নিক গঠন এবং ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম রয়েছে। আর শিলা হলো এক বা একাধিক খনিজের মিশ্রণ। খনিজের নির্দিষ্ট রাসায়নিক সংকেত রয়েছে, শিলার কোনো রাসায়নিক সংকেত নেই। আবার খনিজের ধর্ম এর গঠনকারী মৌলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু শিলার ধর্ম এর গঠনকারী খনিজ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাই খনিজকে শিলা বলা যায় না।

গ) উত্তরঃ সারণিতে উল্লিখিত ‘X’ শিলাটি হলো আগ্নেয় শিলা।

আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় ভূত্বকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এভাবে ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট শিলার সৃষ্টি হয়। এ শিলায় কোনো স্তর নেই। তাই আগ্নেয় শিলার অপর নাম অস্তরীভূত শিলা। এই শিলায় জীবাশ্ম নেই। এটি স্ফটিকাকার, কঠিন ও কম ভঙ্গুর এবং অপেক্ষাকৃত ভারী।

উদ্দীপকের ছকে ‘X’-এ স্ফটিককার, অস্তরীভূত, শক্ত ও কম ভঙ্গুর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শিলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যা আগ্নেয় শিলার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। সুতরাং ‘X’ একটি আগ্নেয় শিলা।

ঘ) উত্তরঃ ‘Y’ হলো পাললিক শিলা এবং ‘Z’ হলো রূপান্তরিত শিলা। ‘Y’ ও ‘Z’ শিলাদ্বয়ের মধ্যে ‘Y’ শিলা তথা পাললিক শিলা মহাদেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।

ভূআন্দোলন, অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প, রাসায়নিক ক্রিয়া কিংবা ভূগর্ভস্থ তাপ আগ্নেয় ও পাললিক শিলাকে রূপান্তরিত করে রূপান্তরিত শিলা গঠিত হয়।

অপরদিকে, পলি সঞ্ছিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয়েছে তাকে পাললিক শিলা বলে। বৃষ্টি, বায়ু, তুষার, তাপ, সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি শক্তির প্রভাবে আগ্নেয় শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বিচূর্ণীভূত হয়ে রূপান্তরিত হয় এবং কাঁকর, কাদা, বালি ও ধুলায় পরিণত হয়। ক্ষয়িত শিলাকণা জলস্রোত, বায়ু এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে পলল বা তলানিরূপে কোনো নিম্নভূমি, হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ঐসব পদার্থ ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে কঠিন শিলায় পরিণত হয়। স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয় বলে একে স্তরীভূত শিলাও বলা হয়। তাছাড়া এ শিলা সহজেই ক্ষয়ীভূত হয় এবং সাগরের তলদেশে সঞ্চিত হতে দেখা যায়।

পলল বা তলানি থেকে গঠিত হয় বলে একে পাললিক শিলা বলে। মহাদেশীয় ভূত্বকের আবরণের ৭৫ ভাগই পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। তাই মহাদেশ গঠনে পাললিক শিলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রশ্ন: ৯ | চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২১

প্রশ্ন: ৯ | চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২১

ক. দোয়ার কাকে বলে?

খ. মরু এলাকায় মাটি সুদৃঢ় নয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

গ. ছকে ‘R’ ভূত্বক গঠনকারী কোন ধরনের উপাদান? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ছকে ‘P’ ও ‘Q’ এর মধ্যে ভূপৃষ্ঠ গঠন কোনটির ভূমিকা অধিক? বিশ্লেষণ কর ।

৯নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ প্রবহমান দুটি নদীর মধ্যবর্তী ভূমিকে দোয়ার বলে।

খ) উত্তরঃ গাছপালা কম থাকার কারণে মরু এলাকার মাটি সুদৃঢ় নয়। বায়ুতে থাকা অক্সিজেন, কার্বন-ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্প রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলার বিচ্ছেদ ও ক্ষয়সাধন করে। বায়ুর ক্ষয়কার্য মরুভূমিতে অধিক দেখা যায়। মরু এলাকা শুষ্ক, প্রায় বৃষ্টিহীন এবং গাছপালা শূন্য। গাছপালার স্বল্পতার কারণে মৃত্তিকা মজবুত নয় ।

আহ্যে ও পাললিক শিলা প্রচন্ড চাপ, উত্তাপ এবং রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপ পরিবর্তন করে নতুন রূপ ধারণ করে তখন তাকে রূপান্তরিত শিলা বলে।

গ) উত্তরঃ ছকে ‘R’ ভূত্বক গঠনকারী রূপান্তরিত শিলা উপাদান।

রূপান্তরিত শিলা স্ফটিকযুক্ত, খুব কঠিন হয়। এতে জীবাশ্ম দেখা যায় না। কোনো কোনো রূপান্তরিত শিলায় ঢেউ খেলানো স্তর দেখা যায়।

ছকে ‘R’ ভূত্বক গঠনকারী উপাদানের সাথে রূপান্তরিত শিলা সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, ‘R’ ভূত্বক গঠনকারী উপাদান হলো ৰূপান্তরিত শিলা।

ঘ) উত্তরঃ ‘P’ হলো আগ্নেয় শিলা এবং ‘Q’ হলো পাললিক শিলা । ‘P’ ও ‘Q’ শিলাদ্বয়ের মধ্যে ‘Q’ শিলা তথা পাললিক শিলা ভূপৃষ্ঠ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় ভূত্বকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি হয়।

অপরদিকে পলি সঞ্জিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয়েছে তাকে পাললিক শিলা বলে। বৃষ্টি, বায়ু, তুষার, তাপ, সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি শক্তির প্রভাবে আগ্নেয় শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বিচূর্ণীভূত হয়ে রূপান্তরিত হয় এবং কাঁকর, কাদা, বালি ও ধুলায় পরিণত হয়। ক্ষয়িত শিলাকণা জলস্রোত, বায়ু এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে পলল বা তলানিরূপে কোনো নিম্নভূমি, হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ঐসব পদার্থ ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে কঠিন শিলায় পরিণত হয়। স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয় বলে একে স্তরীভূত শিলাও বলা হয়। তাছাড়া এ শিলা সহজেই ক্ষয়ীভূত হয় এবং সাগরের তলদেশে সঞ্চিত হতে দেখা যায়।

পলল বা তলানি থেকে গঠিত হয় বলে একে পাললিক শিলা বলে। মহাদেশীয় ভূত্বকের আবরণের ৭৫ ভাগই পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। তাই ভূপৃষ্ঠ গঠনে পাললিক শিলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।

১০ | সিলেট বোর্ড ২০২১

১০ | সিলেট বোর্ড ২০২১

ক. ভূমিকম্প কাকে বলে?

খ. বালুচর কীভাবে সৃষ্টি হয়? ব্যাখ্যা কর ।

গ. ‘P’ পৃথিবীর কোন মণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত? ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. ‘Q’ ও ‘R’ মণ্ডলের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধর।

১০নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ ভূঅভ্যন্তরে দ্রুত বিপুল শক্তি বিমুক্ত হওয়ায় পৃথিবীপৃষ্ঠে যে ঝাঁকুনি সৃষ্টি হয় তাকে ভূমিকম্প বলে ।

খ) উত্তরঃ নদীতে বালি, নুড়ি, কাঁকর কদম ইত্যাদি সঞ্চিত হয়ে যে নতুন ভূমির সৃষ্টি হয় তাকে বালুচর বলে ।

বালুচর প্রধানত দুটি কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে। প্রথমত, নদীর পানিতে যখন অতিরিক্ত বালু, কদম, নুড়ি ইত্যাদি মিশ্রিত থাকে তখন স্রোতের বেগ হ্রাস পায় এবং বাহিত পদার্থসমূহ দ্রুত সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত, আঁকা-বাঁকা নদীর মধ্যে কদম, বালি, নুড়ি ইত্যাদি সঞ্জিত হয়েও বালুচরের সৃষ্টি হয় ।

গ) উত্তরঃ ‘P’ পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত।

গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত মণ্ডলকে কেন্দ্রমণ্ডল বলে। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের তরল বহিরাবরণ প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং কঠিন অন্তঃভাগ প্রায় ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

উদ্দীপকের ছকে ‘P’-তে নিকেল ও পারদের কথা বলা হয়েছে যা কেন্দ্রমণ্ডলে রয়েছে। তাই বলা যায়, ‘P’ পৃথিবীর কেন্দ্রমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত।

ঘ) উত্তরঃ ‘Q’ এবং ‘R’ হলো যথাক্রমে অশ্মমণ্ডল ও গুরুমণ্ডল ৷ অভ্যন্তরীণ গঠন উপাদানগত বৈসাদৃশ্য বিদ্যমান।

ভূপৃষ্ঠে শিলার যে কঠিন বহিরাবরণ দেখা যায় তাই ভূত্বক। ভূঅভ্যন্তরের অন্যান্য স্তরের তুলনায় ভূত্বকের পুরুত্ব সবচেয়ে কম; গড়ে ২০ কিলোমিটার। ভূত্বক মহাদেশের তলদেশে গড়ে ৩৫ কিলোমিটার এবং সমুদ্র তলদেশে তা গড়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পুরু। সাধারণভাবে মহাদেশীয় ভূত্বকের এ স্তরকে সিয়াল স্তর বলে, যা সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা গঠিত, যা সিয়াল স্তরের তুলনায় ভারী এবং এর প্রধান খনিজ উপাদানের সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম যা সাধারণভাবে সিমা নামে পরিচিত। ভূত্বকের উপরের ভাগেই বাহ্যিক অবয়বগুলো দেখা যায়। যেমন— ‘পর্বত, মালভূমি, সমভূমি ইত্যাদি।

অপরদিকে তূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। ঊর্ধ্ব গুরুমণ্ডল যা ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ মণ্ডল প্রধানত লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সিলিকেট খনিজ দ্বারা গঠিত। নিম্ন গুরুমণ্ডল প্রধানত আয়রন অক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম এবং সিলিকন ডাইঅক্সাইড সমৃদ্ধ খনিজ দ্বারা গঠিত । উদ্দীপকের চিত্রে ‘Q’ সিলিকা ও অ্যালুমিনিয়াম এবং ‘R’ লোহা ও ম্যাগনেসিয়াম অক্সাইড দ্বারা গঠিত। সুতরাং এ দুয়ের মধ্যে পৃথিবীর

প্রশ্ন: ১১ | সিলেট বোর্ড ২০২১

ঘটনা-১ : অনন্য ভূগোল গবেষণাগারে ভূত্বক গঠনকারী এক ধরনের উপাদান দেখল যা শক্ত এবং স্ফটিকাকার।

ঘটনা-২ : ফাহিম ও জয়া একই গবেষণাগারে আরও দুই ধরনের ভূত্বক গঠনকারী উপাদান দেখল, যেগুলো স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়ে গঠিত হয়েছে এবং আরেকটি উপাদান রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে রূপ পরিবর্তন করে গঠিত হয়েছে।

ক. নদী উপত্যকা কাকে বলে?

খ. বাতাসের ক্ষয়কার্য মরুভূমিতে অধিক দেখা যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

গ. ঘটনা-১ এ ভূত্বক গঠনকারী কোন ধরনের উপাদান? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. ঘটনা-২ এ ভূপৃষ্ঠ গঠনকারী উপাদান দুটির মধ্যে কোনটি মহাদেশীয় ভূত্বক সৃষ্টিতে অধিক ভূমিকা রাখে? মতামত দাও।

১১নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ যে খাতের মধ্যদিয়ে নদী প্রবাহিত হয় সে খাতকে উক্ত নদীর উপত্যকা বলে।

খ) উত্তরঃ মৃত্তিকা সুদৃঢ় নয় বিধায় বাতাসের ক্ষয়কার্য মরুভূমিতে  দেখা যায়।

বায়ুতে থাকা অক্সিজেন, কার্বন-ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাষ্প রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলায় বিচ্ছেদ ও ক্ষয়সাধন করে। মরু এলাকায় শুষ্ক প্রায় বৃষ্টিহীন এবং গাছপালা শূন্য। মরু এলাকায় গাছপালা কম থাকার কারণে মৃত্তিকা সুদৃঢ় নয়। তাই বায়ুর ক্ষয়ক্ষার্য মরুভূমি এলাকায় বেশি দেখা যায়।

গ) উত্তরঃ ঘটনা-১ এ ভূত্বক গঠনকারী উপাদান হলো আগ্নেয় শিলা।

আগ্নেয়গিরি বা ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় ভূত্বকের দুর্বল অংশে ফাটলের সৃষ্টি হয়। তখন পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে উত্তপ্ত গলিত লাভা নির্গত হয়ে আগ্নেয় শিলার সৃষ্টি করে। এভাবে ব্যাসল্ট ও গ্রানাইট শিলার সৃষ্টি হয়। এ শিলায় কোনো স্তর নেই। তাই আগ্নেয় শিলার অপর নাম অস্তরীভূত শিলা। এই শিলায় জীবাশ্ম নেই, স্ফটিকাকার, কঠিন ও কম ভঙ্গুর এবং অপেক্ষাকৃত ভারী ।

উদ্দীপকের ঘটনা-১ এ অনন্য ভূগোল গবেষণাগারে শক্ত ও স্ফটিকাকার ভূত্বক গঠনকারী উপাদান দেখতে পান যা আগ্নেয় শিলার বৈশিষ্ট্যের সাথে মিল পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, ঘটনা-১ এ ভূত্বক গঠনকারী উপাদান আগ্নেয় শিলা।

ঘ) উত্তরঃ ঘটনা-২ এ ভূপৃষ্ঠ গঠনকারী উপাদান দুটি হলো পাললিক ও রূপান্তরিত শিলা। এ দুয়ের মধ্যে পাললিক শিলা মহাদেশীয় ভূত্বক সৃষ্টিতে অধিক ভূমিকা রাখে।

ভূআন্দোলন, অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প, রাসায়নিক ক্রিয়া কিংবা ভূগর্ভস্থ তাপ আগ্নেয় ও পাললিক শিলাকে রূপান্তরিত করে রূপান্তরিত শিলা গঠিত হয়।।

পলি সঞ্চিত হয়ে যে শিলা গঠিত হয়েছে তাকে পাললিক শিলা বলে। বৃষ্টি, বায়ু, তুষার, তাপ, সমুদ্রের ঢেউ প্রভৃতি শক্তির প্রভাবে আগ্নেয় শিলা ক্ষয়প্রাপ্ত ও বিচূর্ণীভূত হয়ে রূপান্তরিত হয় এবং কাঁকর, কাদা, বালি ও ধুলায় পরিণত হয়। ক্ষয়িত শিলাকণা জলস্রোত, বায়ু এবং হিমবাহ দ্বারা পরিবাহিত হয়ে পলল বা তলানিরূপে কোনো নিম্নভূমি, হ্রদ এবং সাগরগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। পরবর্তীতে ঐসব পদার্থ ভূগর্ভের উত্তাপে ও উপরের শিলাস্তরের চাপে জমাট বেঁধে কঠিন শিলায় পরিণত হয়। স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয় বলে একে স্তরীভূত শিলাও বলা হয়। তাছাড়া এ শিলা সহজেই ক্ষয়ীভূত হয় এবং সাগরের তলদেশে সঞ্চিত হতে দেখা যায়।

পলল বা তলানি থেকে গঠিত হয় বলে একে পাললিক শিলা বলে। মহাদেশীয় ভূত্বকের আবরণের ৭৫ ভাগই পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত। তাই মহাদেশ গঠনে পাললিক শিলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

১২ | দিনাজপুর বোর্ড ২০২১

ক. ভূমিকম্প কী?

খ. সুনামি কাকে বলে?

গ. উদ্দীপকের ‘C’ চিহ্নিত উপাদানগুলো কোন স্তরের অন্তর্গত? ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে ‘A’ ও ‘B’ চিহ্নিত উপাদানগুলোর মধ্যে কোনগুলো জীবজগতের জন্য অধিক গুরুত্ব বলে তুমি মনে কর? তোমার মতের সপক্ষে যুক্তি দাও।

১২নং প্রশ্নের উত্তর

ক) উত্তরঃ ভূঅভ্যন্তরে দ্রুত বিপুল শক্তি বিমুক্ত হওয়ায় পৃথিবীপৃষ্ঠে যে ঝাঁকুনি সৃষ্টি হয় তাকে ভূমিকম্প বলে।

খ) উত্তরঃ সুনামি হলো পানির এক মারাত্মক ঢেউ যা, সমুদ্রের মধ্যে বা বিশাল হ্রদে ভূমিকম্প বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সৃষ্টি হয়ে থাকে।

সুনামির পানির ঢেউ সমুদ্রের স্বাভাবিক ঢেউয়ের মতো নয়। এটা সাধারণ ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বিশালাকৃতির। অতি দ্রুত ফুঁসে ফুঁসে ওঠা জোয়ারের মতো যা উপকূল ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করে। পানির নিচে কোনো পারমাণবিক ঝ অন্য কোনো বিস্ফোরণ, ভূপাত ইত্যাদি কারণেও সুনামি হতে পারে।

গ) উত্তরঃ উদ্দীপকে ‘C’ চিহ্নিত উপাদানগুলো কেন্দ্ৰমণ্ডল স্তরের অন্তর্গত গুরুমণ্ডলের নিচ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত মণ্ডলকে কেন্দ্রমণ্ডল বলে। এ স্তর প্রায় ৩,৪৮৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের ত বহিরাবরণ প্রায় ২,২৭০ কিলোমিটার পুরু এবং কঠিন অন্তঃভাগ প্রার ১,২১৬ কিলোমিটার পুরু। কেন্দ্রমণ্ডলের উপাদানগুলোর মধ্যে লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা রয়েছে। তবে প্রধান উপাদান হলো নিকেল ও লোহা।

উদ্দীপকে ‘C’ চিহ্নিত উপাদানগুলো হলো লোহা, নিকেল, পারদ ও সিসা। যা পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠনের কেন্দ্রমণ্ডল স্তরে রয়েছে। তাই বলা যায়, ‘C’ চিহ্নিত উপাদানগুলো কেন্দ্ৰমণ্ডলের অন্তর্গত।

ঘ) উত্তরঃ উদ্দীপকের ‘A’ অশ্মমণ্ডলের উপাদান এবং ‘B’ গুরুমণ্ডলের উপাদানকে নির্দেশ। এ দুয়ের মধ্যে ‘A’ উপাদানগুলো জীবজগতের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

অশ্মমণ্ডল পৃথিবীর বাইরের স্তর। পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে মানুষসহ সকল প্রাণী বসবাস করছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বাইরের স্তর। এ স্তরে সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি উপাদান বিদ্যমান। এ স্তরের উপরিভাগে কোমল মাটি বিদ্যমান। যেখানে উদ্ভিদরাজি জন্মায়; মানুষ ভূপৃষ্ঠে কৃষিকাজ পরিচালনা করে তাদের যাবতীয় খাদ্যের সংস্থান করে থাকে। গোটা মানবজাতির অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ। কেননা এ স্তরই সৌরশক্তি; বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডলের আধার। আর পৃথিবীপৃষ্ঠের পরিবেশ সহনীয়। তাই অশ্মমণ্ডল বা ভূত্বক জীবজগতের বিকাশে সহায়ক হয়েছে।

ভূত্বকের নিচে প্রায় ২,৮৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুরুমণ্ডলকে গুরুমণ্ডল বলে। গুরুমণ্ডল মূলত ব্যাসল্ট শিলা দ্বারা গঠিত। এ অংশে রয়েছে সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, কার্বন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ। এ মণ্ডলটি যথেষ্ট উত্তপ্ত হলেও চারিদিকের প্রচণ্ড চাপের প্রভাবে এ অংশের উপাদানগুলো তরল ও কঠিনের মধ্যবর্তী কর্দমাক্ত অবস্থায় রয়েছে। তাই এখানে জীবজন্তুর উপস্থিতি থাকা সম্ভব নয় ।

সুতরাং অশ্মমণ্ডল ও গুরুমণ্ডল অর্থাৎ ‘A’ ও ‘B’ উপাদানগুলোর মধ্যে ‘A’ উপাদানগুলোর জীবজগতের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply